১৯৬৭ সালে আজকের দিনটিতে নিরস্ত্র অবস্থায় নয়টি গুলি করে হত্যা করা হয়েছিল বন্দী চে গুয়েভারাকে। সেই নয়টি গুলিতে মারা যায়নি চে’র মতবাদ।
৯ অক্টোবর, ১৯৬৭। বলিভীয় সেনাবাহিনী দম্ভভরে ঘোষণা করল, তারা হত্যা করতে পেরেছে চে গুয়েভারাকে। হাত বাঁধা অবস্থায় একে একে নয়টি গুলি চালিয়ে আর্জেন্টাইন সেই ‘সন্ত্রাসী’কে মেরে ফেলতে পেরেছে এক মদ্যপ সৈনিক!
বলিভীয় সেনাবাহিনীর এমন ‘মহা সাহসী’কর্মে উল্লসিত নিউইয়র্ক টাইমস পত্রিকা সে সময় লিখেছিল, ‘একজন মানুষের সঙ্গে সঙ্গে একটি মিথও চিরতরে বিশ্রামে চলে গেল।’
সেদিনের সেই লেখক কি বেঁচে আছেন? বেঁচে থাকলে আজ লজ্জায় তাঁর মুখ লুকানোর কথা। কারণ সেই মানুষটি আসলে মরেননি, মরেনি তাঁর মতাদর্শও। খোদ ইউরোপ-আমেরিকাতেই বিয়ার, ফুটবল, পানি, ড্রিংকস—সবকিছুর বুকে এখন সেই ‘সন্ত্রাসী’র ছবি। পণ্যের ছবি দিয়েও অমর মানুষ চে গুয়েভারা।
আর বলিভিয়া, কিউবা, আর্জেন্টিনা, ভেনেজুয়েলা, কানাডা, ফিলিস্তিন থেকে শুরু করে নেপাল, এমনকি বাংলাদেশ পর্যন্ত কোটি কোটি মানুষের বদলের স্বপ্ন হয়ে আছে অমর চে গুয়েভারার আদর্শ, চে’র মিথ!
মানুষ চে গুয়েভারা মারা গেছেন চার দশকেরও বেশি সময় আগে। কিন্তু এই একবিংশ শতাব্দীতে পা দিয়ে আমরা পরম বিস্ময়ে লক্ষ করছি, তিনি আরও বেশি করে মানুষের অপ্রাপ্তি-বঞ্চনার বিপক্ষে রুখে দাঁড়ানোর অনুপ্রেরণা হয়ে উঠছেন।
চে গুয়েভারাকে নিয়ে গবেষণা করতে থাকা আর্জেন্টাইন এক সাংবাদিক মাইকেল ক্যাসে বলছিলেন, ‘আমার মনে হয় না যে দুনিয়াজুড়ে লোকজন বিপ্লবী চেতনার কারণে তাঁর প্রতি আকৃষ্ট হয়। তবে আমাদের আর্জেন্টিনায় বা লাতিন আমেরিকায় এখন তাঁকে সত্যিকার অর্থেই অনুসরণ করা হচ্ছে।’
লাতিন আমেরিকায় চে গুয়েভারাকে বাঁচিয়ে রাখার সবচেয়ে বড় কাজটি করছেন তাঁর বন্ধু ও বিপ্লবী নেতা ফিদেল কাস্ত্রো। চে’র চেহারা বিপ্লবী হিসেবে মানুষের মধ্যে ধরে রাখতে অসাধারণ ভূমিকা রাখছেন ভেনেজুয়েলার প্রেসিডেন্ট হুগো শাভেজও।
শাভেজ তাঁর বিভিন্ন ভাষণে বারবার মনে করিয়ে দিয়েছেন, ‘একুশ শতকের সমাজতন্ত্রের’ জন্য চাই চে’র মতো আত্মত্যাগ। সেই আত্মত্যাগ নিজে করার প্রতিশ্রুতি যেমন দেন, তেমনি তরুণদেরও ডাক দিচ্ছেন এ কাজ করতে।
শাভেজ-কাস্ত্রোর আরেক মিত্র ইভো মোরালেসের ভূমিকা অবশ্য আরও উল্লেখযোগ্য। নিয়তির এক অদ্ভুত খেলা হয়েই যেন বলিভিয়ার ক্ষমতায় এসেছেন আদিবাসী নেতা ইভো মোরালেস। যে বলিভিয়ায় একদিন কাপুরুষোচিতভাবে হত্যা করা হয়েছিল চে গুয়েভারাকে, সেই বলিভিয়ার প্রেসিডেন্ট এখন চে’র আদর্শে পথ চলছেন! প্রতিনিয়ত সবাইকে মনে করিয়ে দিচ্ছেন, রোগ-বালাই-দারিদ্র্যের বিপক্ষে সংগ্রাম করতে চে’কে অনুসরণ করতে হবে।
আর্জেন্টিনায় এখন ছাত্রদের বিক্ষোভ কিংবা নাগরিক অসন্তোষের বহিঃপ্রকাশ করা হচ্ছে চে গুয়েভারার ছবিসংবলিত প্লাকার্ড হাতে নিয়ে। চে’র জন্মভূমিতে আজন্ম বিপ্লবীর এই পুনর্জাগরণ পর্যবেক্ষণ করছেন এলাদিও গঞ্জালেস। ভদ্রলোক একসময় ‘চে গুয়েভারা মিউজিয়াম’ নামের একটি জাদুঘর চালাতেন। তিনি বলেছেন, ‘এখন গুয়েভারা আমাদের এখানে সব জায়গায় আছেন। তাঁর পুনর্জন্ম হয়েছে বলা চলে।’
অন্যায়ের বিরুদ্ধে লড়াই, আপস না করা, চিরন্তন বিপ্লবে বিশ্বাস; বিজ্ঞাপনের চে’কে ছাপিয়ে চে’র আদর্শিক এই চেহারা ফুটে উঠেছে উত্তর আমেরিকায়ও। কানাডায় গত বছরের জুনে আয়োজিত হয়েছিল চে-বিষয়ক প্রথম কোনো আন্তর্জাতিক সম্মেলন—‘থিংকার অ্যান্ড ফাইটার’।
এই একুশ শতকেও চে গুয়েভারার মতাদর্শ কার্যকর কি না, এ-ই ছিল সে সম্মেলনের প্রধান আলোচ্য। কানাডা, কিউবা, ভেনেজুয়েলা, বলিভিয়া, যুক্তরাষ্ট্র ও মধ্যপ্রাচ্যের শতাধিক আলোচক অংশ নিয়েছিলেন সম্মেলনে। আলোচকেরা মোটামুটি একমত হয়েছেন, বর্তমান বিশ্বে শোষণের বিপক্ষে, কুশাসনের বিপক্ষে চে’র অনুপ্রেরণা সমান কার্যকর।
এই আলোচকদের কথার প্রমাণ মিলবে নেপালের রাস্তাঘাটে। গাড়ির বনেট, ক্যাফের সাইনবোর্ড কিংবা টি-শার্ট—সব জায়গাতেই চে। সেটা কথা নয়; কথা হলো, এই দেশের তরুণ প্রজন্মের চে’কে নিয়ে চিন্তা। নেপালের রাস্তায় দৈবচয়নের ভিত্তিতে কয়েকজন তরুণকে জিজ্ঞেস করা হয়েছিল—চে কে ছিলেন? প্রায় সবার বক্তব্য ছিল, ‘একজন প্রলেতারিয়েত; যিনি সারা জীবন অন্যায়ের বিরুদ্ধে লড়াই করেছেন।’
দেশটির তরুণেরা তাদের যেকোনো আন্দোলন-সংগ্রামে চে’র ছবি হাতে রাস্তায় নামতে অভ্যস্ত। তাদের বক্তব্য, এতে তারা বাড়তি অনুপ্রেরণা পায়। ‘ইয়ুথ কমিউনিস্ট লিগ’ নামের একটি সংগঠন সেখানে নিজেদের উদ্যোগে ট্যাক্সিক্যাব থেকে শুরু করে পাবলিক বাসে সেঁটে দিয়েছে চে’র স্টিকার। ডাক দেওয়া হয়েছে দিনবদলের।
আন্দোলনকারীদের মধ্যে এই চে-প্রিয়তা লক্ষ করা যাবে ফিলিস্তিন কিংবা সুদানেও। মজার ব্যাপার হচ্ছে, এই দেশগুলোতেই চে’র যেন সত্যিকারের মুক্তি ঘটেছে। এসব দেশে চে আর শুধু বামপন্থীদের লড়াইয়ের হাতিয়ার হিসেবে আটকে নেই, যেকোনো অন্যায়ের বিপক্ষে যেকোনো আন্দোলনকারীর প্রতীক এখানে চে।
বিশ্বায়নবিরোধী কিংবা যুদ্ধবিরোধী সমাবেশগুলোতেও এখন চে’র প্লাকার্ড! এখানেও ভিন্ন এক লড়াকু হিসেবে আবির্ভূত চে গুয়েভারা। এখানেও দাপটের সঙ্গে টিকে আছেন তিনি।
তাহলে নিউইয়র্ক টাইমসই ভুলটা করেছিল? আসলে ভুলটা করেছিল চে’র হত্যাকারীরা। একটা মানুষকে মেরে একটা আদর্শ মেরে ফেলতে চেয়েছিল। তাই কি হয়!
হয়েছিল উল্টোটা। গুলিবিদ্ধ লাশের শোয়ানো ছবি প্রকাশ করেছিল বলিভিয়ার সরকার। তারা ভেবেছিল, এতে লোকজন চে’র প্রতি আকর্ষণ হারাবে। অথচ সেই ছবিকেই এখন বলা হচ্ছে ‘ক্রুশ থেকে নামানো খ্রিষ্টের ছবি’! সেই ছবিই এখন মানুষকে নতুন করে ভাবাচ্ছে।
ঠিক এই সময়টার কথাই বোধহয় মৃত্যুর মুহূর্তে কল্পনা করছিলেন চে। তাঁকে মারতে স্কুলঘরে ঢুকেছে মদ্যপ সৈনিক। চে’কে জিজ্ঞেস করা হলো, ‘কী ভাবছ তুমি?’ চে স্মিত হেসে জবাব দিলেন, ‘বিপ্লবের অবিনশ্বরতার কথা ভাবছিলাম।’
বিবিসি নিউজ, নেপাল টাইমস ও আয়ারল্যান্ডের সোশ্যালিস্ট ভিউ অবলম্বনে
৯ অক্টোবর, ১৯৬৭। বলিভীয় সেনাবাহিনী দম্ভভরে ঘোষণা করল, তারা হত্যা করতে পেরেছে চে গুয়েভারাকে। হাত বাঁধা অবস্থায় একে একে নয়টি গুলি চালিয়ে আর্জেন্টাইন সেই ‘সন্ত্রাসী’কে মেরে ফেলতে পেরেছে এক মদ্যপ সৈনিক!
বলিভীয় সেনাবাহিনীর এমন ‘মহা সাহসী’কর্মে উল্লসিত নিউইয়র্ক টাইমস পত্রিকা সে সময় লিখেছিল, ‘একজন মানুষের সঙ্গে সঙ্গে একটি মিথও চিরতরে বিশ্রামে চলে গেল।’
সেদিনের সেই লেখক কি বেঁচে আছেন? বেঁচে থাকলে আজ লজ্জায় তাঁর মুখ লুকানোর কথা। কারণ সেই মানুষটি আসলে মরেননি, মরেনি তাঁর মতাদর্শও। খোদ ইউরোপ-আমেরিকাতেই বিয়ার, ফুটবল, পানি, ড্রিংকস—সবকিছুর বুকে এখন সেই ‘সন্ত্রাসী’র ছবি। পণ্যের ছবি দিয়েও অমর মানুষ চে গুয়েভারা।
আর বলিভিয়া, কিউবা, আর্জেন্টিনা, ভেনেজুয়েলা, কানাডা, ফিলিস্তিন থেকে শুরু করে নেপাল, এমনকি বাংলাদেশ পর্যন্ত কোটি কোটি মানুষের বদলের স্বপ্ন হয়ে আছে অমর চে গুয়েভারার আদর্শ, চে’র মিথ!
মানুষ চে গুয়েভারা মারা গেছেন চার দশকেরও বেশি সময় আগে। কিন্তু এই একবিংশ শতাব্দীতে পা দিয়ে আমরা পরম বিস্ময়ে লক্ষ করছি, তিনি আরও বেশি করে মানুষের অপ্রাপ্তি-বঞ্চনার বিপক্ষে রুখে দাঁড়ানোর অনুপ্রেরণা হয়ে উঠছেন।
চে গুয়েভারাকে নিয়ে গবেষণা করতে থাকা আর্জেন্টাইন এক সাংবাদিক মাইকেল ক্যাসে বলছিলেন, ‘আমার মনে হয় না যে দুনিয়াজুড়ে লোকজন বিপ্লবী চেতনার কারণে তাঁর প্রতি আকৃষ্ট হয়। তবে আমাদের আর্জেন্টিনায় বা লাতিন আমেরিকায় এখন তাঁকে সত্যিকার অর্থেই অনুসরণ করা হচ্ছে।’
লাতিন আমেরিকায় চে গুয়েভারাকে বাঁচিয়ে রাখার সবচেয়ে বড় কাজটি করছেন তাঁর বন্ধু ও বিপ্লবী নেতা ফিদেল কাস্ত্রো। চে’র চেহারা বিপ্লবী হিসেবে মানুষের মধ্যে ধরে রাখতে অসাধারণ ভূমিকা রাখছেন ভেনেজুয়েলার প্রেসিডেন্ট হুগো শাভেজও।
শাভেজ তাঁর বিভিন্ন ভাষণে বারবার মনে করিয়ে দিয়েছেন, ‘একুশ শতকের সমাজতন্ত্রের’ জন্য চাই চে’র মতো আত্মত্যাগ। সেই আত্মত্যাগ নিজে করার প্রতিশ্রুতি যেমন দেন, তেমনি তরুণদেরও ডাক দিচ্ছেন এ কাজ করতে।
শাভেজ-কাস্ত্রোর আরেক মিত্র ইভো মোরালেসের ভূমিকা অবশ্য আরও উল্লেখযোগ্য। নিয়তির এক অদ্ভুত খেলা হয়েই যেন বলিভিয়ার ক্ষমতায় এসেছেন আদিবাসী নেতা ইভো মোরালেস। যে বলিভিয়ায় একদিন কাপুরুষোচিতভাবে হত্যা করা হয়েছিল চে গুয়েভারাকে, সেই বলিভিয়ার প্রেসিডেন্ট এখন চে’র আদর্শে পথ চলছেন! প্রতিনিয়ত সবাইকে মনে করিয়ে দিচ্ছেন, রোগ-বালাই-দারিদ্র্যের বিপক্ষে সংগ্রাম করতে চে’কে অনুসরণ করতে হবে।
আর্জেন্টিনায় এখন ছাত্রদের বিক্ষোভ কিংবা নাগরিক অসন্তোষের বহিঃপ্রকাশ করা হচ্ছে চে গুয়েভারার ছবিসংবলিত প্লাকার্ড হাতে নিয়ে। চে’র জন্মভূমিতে আজন্ম বিপ্লবীর এই পুনর্জাগরণ পর্যবেক্ষণ করছেন এলাদিও গঞ্জালেস। ভদ্রলোক একসময় ‘চে গুয়েভারা মিউজিয়াম’ নামের একটি জাদুঘর চালাতেন। তিনি বলেছেন, ‘এখন গুয়েভারা আমাদের এখানে সব জায়গায় আছেন। তাঁর পুনর্জন্ম হয়েছে বলা চলে।’
অন্যায়ের বিরুদ্ধে লড়াই, আপস না করা, চিরন্তন বিপ্লবে বিশ্বাস; বিজ্ঞাপনের চে’কে ছাপিয়ে চে’র আদর্শিক এই চেহারা ফুটে উঠেছে উত্তর আমেরিকায়ও। কানাডায় গত বছরের জুনে আয়োজিত হয়েছিল চে-বিষয়ক প্রথম কোনো আন্তর্জাতিক সম্মেলন—‘থিংকার অ্যান্ড ফাইটার’।
এই একুশ শতকেও চে গুয়েভারার মতাদর্শ কার্যকর কি না, এ-ই ছিল সে সম্মেলনের প্রধান আলোচ্য। কানাডা, কিউবা, ভেনেজুয়েলা, বলিভিয়া, যুক্তরাষ্ট্র ও মধ্যপ্রাচ্যের শতাধিক আলোচক অংশ নিয়েছিলেন সম্মেলনে। আলোচকেরা মোটামুটি একমত হয়েছেন, বর্তমান বিশ্বে শোষণের বিপক্ষে, কুশাসনের বিপক্ষে চে’র অনুপ্রেরণা সমান কার্যকর।
এই আলোচকদের কথার প্রমাণ মিলবে নেপালের রাস্তাঘাটে। গাড়ির বনেট, ক্যাফের সাইনবোর্ড কিংবা টি-শার্ট—সব জায়গাতেই চে। সেটা কথা নয়; কথা হলো, এই দেশের তরুণ প্রজন্মের চে’কে নিয়ে চিন্তা। নেপালের রাস্তায় দৈবচয়নের ভিত্তিতে কয়েকজন তরুণকে জিজ্ঞেস করা হয়েছিল—চে কে ছিলেন? প্রায় সবার বক্তব্য ছিল, ‘একজন প্রলেতারিয়েত; যিনি সারা জীবন অন্যায়ের বিরুদ্ধে লড়াই করেছেন।’
দেশটির তরুণেরা তাদের যেকোনো আন্দোলন-সংগ্রামে চে’র ছবি হাতে রাস্তায় নামতে অভ্যস্ত। তাদের বক্তব্য, এতে তারা বাড়তি অনুপ্রেরণা পায়। ‘ইয়ুথ কমিউনিস্ট লিগ’ নামের একটি সংগঠন সেখানে নিজেদের উদ্যোগে ট্যাক্সিক্যাব থেকে শুরু করে পাবলিক বাসে সেঁটে দিয়েছে চে’র স্টিকার। ডাক দেওয়া হয়েছে দিনবদলের।
আন্দোলনকারীদের মধ্যে এই চে-প্রিয়তা লক্ষ করা যাবে ফিলিস্তিন কিংবা সুদানেও। মজার ব্যাপার হচ্ছে, এই দেশগুলোতেই চে’র যেন সত্যিকারের মুক্তি ঘটেছে। এসব দেশে চে আর শুধু বামপন্থীদের লড়াইয়ের হাতিয়ার হিসেবে আটকে নেই, যেকোনো অন্যায়ের বিপক্ষে যেকোনো আন্দোলনকারীর প্রতীক এখানে চে।
বিশ্বায়নবিরোধী কিংবা যুদ্ধবিরোধী সমাবেশগুলোতেও এখন চে’র প্লাকার্ড! এখানেও ভিন্ন এক লড়াকু হিসেবে আবির্ভূত চে গুয়েভারা। এখানেও দাপটের সঙ্গে টিকে আছেন তিনি।
তাহলে নিউইয়র্ক টাইমসই ভুলটা করেছিল? আসলে ভুলটা করেছিল চে’র হত্যাকারীরা। একটা মানুষকে মেরে একটা আদর্শ মেরে ফেলতে চেয়েছিল। তাই কি হয়!
হয়েছিল উল্টোটা। গুলিবিদ্ধ লাশের শোয়ানো ছবি প্রকাশ করেছিল বলিভিয়ার সরকার। তারা ভেবেছিল, এতে লোকজন চে’র প্রতি আকর্ষণ হারাবে। অথচ সেই ছবিকেই এখন বলা হচ্ছে ‘ক্রুশ থেকে নামানো খ্রিষ্টের ছবি’! সেই ছবিই এখন মানুষকে নতুন করে ভাবাচ্ছে।
ঠিক এই সময়টার কথাই বোধহয় মৃত্যুর মুহূর্তে কল্পনা করছিলেন চে। তাঁকে মারতে স্কুলঘরে ঢুকেছে মদ্যপ সৈনিক। চে’কে জিজ্ঞেস করা হলো, ‘কী ভাবছ তুমি?’ চে স্মিত হেসে জবাব দিলেন, ‘বিপ্লবের অবিনশ্বরতার কথা ভাবছিলাম।’
বিবিসি নিউজ, নেপাল টাইমস ও আয়ারল্যান্ডের সোশ্যালিস্ট ভিউ অবলম্বনে
0 comments:
Post a Comment